সতর্কতা ছাড়াই গোমতী নদীর ওপর নির্মিত ডম্বুর গেট খুলে দেয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হওয়ার দাবি অস্বীকার করেছে ভারত।
আগাম সতর্কতা ছাড়াই গোমতী নদীর ওপর নির্মিত ডম্বুর গেট খুলে দেয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হওয়ার দাবি আবারো অস্বীকার করেছে ভারত। বাংলাদেশের ভয়াবহ বন্যা নিয়ে সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন সিএনএনের এ খবরকে বিভ্রান্তিকর এবং অসত্য হিসেবে অভিহিত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল। 
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদন আমরা দেখেছি। এটি বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তবে সত্য নয়। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বিবৃতি দিয়েছিল সেটির বক্তব্য এই প্রতিবেদনে উপেক্ষা করা হয়েছে
তিনি আরো বলেছেনএছাড়া যৌথ পানি ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান যৌথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা যে (বাংলাদেশের সঙ্গে) নিয়মিত এবং সময়মতো তথ্য আদান প্রদান করি সেটিও প্রতিবেদনে বলা হয়নি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের ভিডিও প্রতিবেদনে ফেনীর বেশ কয়েকজন মানুষের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। তারা সবাই বন্যা পরিস্থিতির জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। 
ফেনী বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের খুবই কাছে অবস্থিত। সাধারণ মানুষ সিএনএনকে বলেছেনকোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই ত্রিপুরার ডম্বুর বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে তারা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের অভিযোগের মুখে গত সপ্তাহে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা দাবি করেবাঁধ খুলে দেয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হয়নি। বন্যা হয়েছে ত্রিপুরা ও বাংলাদেশে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কারণে। 
দেশটির মন্ত্রণালয়ের এ বিবৃতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে ট্রল করেন বাংলাদেশি নেটিজেনরা। এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথও। তিনি বলেনতারা বলছেন যেআমরা ডম্বুরের গেট খুলে দিয়েছিসেটা যে সঠিক তথ্য নয়তা দেখার জন্য তারা যদি সীমান্ত পেরিয়ে ত্রিপুরায় আসেনআমি নিজে গাড়ি করে তাদের নিয়ে যাব ডম্বুর দেখাতে। তিনি বলেনতারা নিজেরা দেখতে পারেন যেআমরা নিজের থেকে গেট খুলে দিতে পারি কি না! সেটা সম্ভব কি না!
ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেছেনযে প্রচারটা করা হচ্ছে ডম্বুর গেট খুলে দেয়া নিয়েসেটা অপপ্রচার ছাড়া কিছু না। গোমতী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনো গেট খুলে দেয়া হয়নি। তিনি আরো বলেনএই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধারটির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৯৪ মিটার। জলস্তর এর বেশি উঠলেই একা একাই জল গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। জলস্তর আবার নিচে নেমে গেলে নিজের থেকেই গেট বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি বলেনজলস্তর সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতার বেশি হয়ে যেতেই জলাধারের দুটি গেট দিয়ে জল বেরোচ্ছে। এর মধ্যে একটি গেট দিয়ে ৫০ শতাংশ হারে জল বেরোচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষকে আগে থেকেই মাইকিং করে সতর্ক থাকার অনুরোধও জানানো হয়েছিল সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক