গতকালই বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছিলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতা বৈঠকে বসবেন।
আরও মজবুত ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সম্পর্ক। দুদিনের ভারত সফরে এসেছেন আবু ধাবির যুবরাজ তথা সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সশস্ত্র বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার শেখ মহম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তিনি আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে মরুদেশে গিয়ে প্রথম হিন্দুমন্দিরের উদ্বোধন করেছিলেন মোদি। যা আবু ধাবিতে অবস্থিত। সেসময় তিনি বার্তা দিয়েছিলেন যেদুদেশের মৈত্রী দীর্ঘজীবী হোক। ভবিষ্যতে এই মজবুত বন্ধুত্ব কায়েম রাখতে উদ্যোগী দিল্লি-আবু ধাবি। 
প্রধানমন্ত্রী মোদির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে রবিবার ভারতে পা রাখেন আবু ধাবির যুবরাজ নাহিয়ান। সোমবার তিনি দিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। এর পর রাজধানীর হায়দরা হাউসে নমোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। আমিরশাহি ও ভারতের সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে দুজনে বৈঠকে বসেন। গতকালই বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছিলেনদ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতা বৈঠকে বসবেন। এছাড়া বিদেশমন্ত্রকের তরফেও বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ‘ভারত ও আরব আমিরশাহির বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক। আগামী দিনে এই সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যলগ্নিশক্তিপ্রযুক্তিশিক্ষা-সহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও দৃঢ় হবে।’ ভারতের সঙ্গে বন্ধন আরও মজবুত করতে আগ্রহী আবু ধাবির যুবরাজ নাহিয়ানও। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবরআগামীকাল ১০ সেপ্টেম্বর মায়ানগরী মুম্বইতে যাবেন তিনি। যোগ দেবেন বিজনেস ফোরামে। 
আরব দুনিয়ায় উত্তরোত্তর গুরুত্ব বাড়ছে ভারতের। আমিরশাহিসৌদি আরবওমান-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রথম হিন্দু মন্দির বোচাসনবাসী অক্ষর পুরুষোত্তম স্বামীনারায়ণ সংস্থা (বিএপিএস)। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি যার দ্বারোদ্ঘাটন হয়েছিল মোদির হাত ধরে। এই মন্দিরের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জুড়ে রয়েছে ভারতও।  সেসময়ই নাহিয়ানকে দিল্লিতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নমো। লোকসভা নির্বাচনের পর জুন মাসে আবু ধাবি গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। বিএপিএস মন্দির দর্শন করার পর তিনি জানিয়েছিলেনএই উপাসনাস্থল ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বন্ধুত্বের প্রতীক। সাংস্কৃতিকভাবেও একে ওপরের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে দুদেশ। 
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতেআরব আমিরশাহির সঙ্গে ভারসাম্যের খেলায় নেমেছে ভারত। বর্তমানে গাজায় হামাস বনাম ইজরায়েল যুদ্ধে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। তেল আভিভের বিরুদ্ধে সরব মুসলিম বিশ্ব। কিন্তু ইজরায়েলের সঙ্গেও দিল্লির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। হাজার হাজার ভারতীয়ের কর্মসংস্থান হয়েছে ইহুদি দেশটিতে। এদিকেআরব দেশগুলোর সঙ্গেও ভারতের ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। তাই কোনও পক্ষের সঙ্গেই সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না সাউথ ব্লক। ফলে প্রতিনিয়ত আলোচনা ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে সহযোগিতার সম্পর্ক বজায় রাখতে উদ্যোগী দিল্লি। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক